বিটিভির মহাপরিচালক ও উপ মহাপরিচালক এর অপসারণের দাবি

0
বাংলাদেশ টেলিভিশন এর মহাপরিচালক মো হারুনর রশীদ, এবং উপ মহাপরিচালক সুরত কুমার সরকারের অপসারণের দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও গ্রন্থনার সাথে সম্পৃক্ত আওয়ামী লীগের প্রায় সকল সংস্কৃতি কর্মীরা এই দাবি জানিয়েছেন। ২০০৯ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামীলীগ। সরকার গঠনের পর কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী মহা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পয়ে তিনি সরকারের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মকান্ডকে তুলে ধরার জন্য, আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সংস্কৃতি কর্মীদের অনুষ্ঠান পরিকল্পনার জন্য দায়িত্ব দেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক সহ অন্যান সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দরা একটি করে অনুষ্ঠান নির্মানের সুযোগ পায়। এর ফলে ঠিকাদারী তদবিরবাজী না করে গত ১০ বছর এ পেশায় সম্পৃক্ত রয়েছেন আওয়ামী সংস্কৃতি কর্মীরা। কিন্তু বিটিভির বর্তমান ডিজি দায়িত্ব নিয়েই বিটিভিতে কর্মরত আওয়ামীলীগের সকল সংস্কৃতি কর্মীদের অনুষ্ঠান একের পর এক বন্ধ করার ঘোষণা দেন। আর তাকে সহযোগিতা করছেন ডিডিজি সুরথ বাবু। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায় যে, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি কর্মীদের বিটিভি থেকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে মানহীনতার দোহাই দিয়ে অনুষ্ঠান গুলোর ধারণ স্থগিত করার আদেশ দিয়েছেন বিটিভির উপ মহাপরিচালক। একেবারে অশুদ্ধ উচ্চারণে উপস্থাপনা করা সত্বেও কিছু অনুষ্ঠানের ধারন নিয়মিত চালু আছে। দুই এক জন ছাড়া আওয়ামী সংস্কৃতি কর্মীরা প্রায় সকলই এখন বিটিভি নিয়মিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ তথা অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করতে পারছেনা। যে দু-এক জন অনুষ্ঠান করছেন তারা ডিজি অথবা ডিডিজি র সাথে একক সম্পর্কের কারনে। অন্য দিকে একটি বিশেষ নাটকের দল,দু একজন বিশেষ নাট্যকার এবং ঐ বিশেষ নাটকের দলের কর্মীদেরকেই প্রায় সব নাটকেই দেখা যায়। যদিও তারা অধিকাংশই তালিকাভুক্ত নয়। মনে হয় যেন ঐ বিশেষ নাটকের দলই আন্দোলন সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে। আর ডিজি তার দায় শোধরাবার চেষ্টা করছেন। কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে, তালিকাভুক্ত নয় এমন নির্দেশকদের দিয়ে ক্যাসেট চুক্তি লেনদেনের মাধ্যমে মেগা সিরিয়াল/ ডেইলি সোপ/টেলিফিল্ম /সহ অন্যান নাটক নির্মাণ করা হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান নির্মানের আগেই অনৈতিক বাজেটের টাকা উত্তোলন করে ঐ সব লোকদেরকে দেয়া হচ্ছে। এতে শিল্পী নির্বাচনে তালিকাভুক্তির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সাবেক ডিজি কবি আসাদ মান্নান নাটকের পান্ডুলিপি নির্বাচনের জন্য বিশিষ্ট নাট্যকার ড. ইনামুল হককে প্রধান করে একটি কমিটি করেন। তার পরেও বর্তমান বিটিভি নাটকের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে ড.ইনাম বলেন, ‘এই ডিজি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমেই এই কমিটি অকার্যকর করে রেখেছেন’। ধারনা করা হচ্ছে বিশেষ কিছু নাট্যকারদের বার বার সুযোগ দেয়া, মেগা সিরিয়াল করা, ডেইলি সোপ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান নির্মানের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত টাকার একটি বড় অংশ হাতিয়ে নেয়ার জন্যই ঐ কমিটি অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। বিটিভির নীতিমালা অনুযায়ী বিটিভির কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং তাদের পোষ্যদের কেউ বিটিভির কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু স্বয়ং ডিজি নিজেই একাধিক নাটক রচনা করেছেন। বিগত ৫৩ বছরে হারুনুর রশীদ বিটিভির যত গুলো নাটক রচনা করেছেন গত দুই বছরে ডিজি হওয়ার পরে তার চেয়ে অধিক নাটক রচনা করেছেন। ডিজির এমন শিষ্টাচারিতার কঠিন সমালোচনা করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দরা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী হসান মাহমুদ বরাবর একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে এই দুই কর্মকর্তার অপসারন চাইবেন বলে জানা গেছে।
Share.

Comments are closed.