সাদিয়া আক্তার পিংকি তৃতীয় লিঙ্গের জনপ্রতিনিধি

0
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের একজন হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাদিয়া আক্তার পিংকি। সোমবার (১৪ অক্টোবর) পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ হাজার ৮৮০ ভোট পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে জয়লাভ করেন।  দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ জনপ্রতিনিধি বলেন, কোটচাঁদপুরের জনগণের উন্নয়ন ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সম্মান এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান তিনি। এ কাজে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। পিংকি (৩৭) কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের সোয়াদি গ্রামের নওয়াব আলীর সন্তান। তারা চার ভাই-বোন। বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। মা কুলসুম বেগম জীবিত আছেন। দুই ভাই শেখ জালাল ও শেখ রতন কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মেয়ে হিসেবে পিংকিকে বড় করা হয়। দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা পিংকিকে বিয়েও দিয়েছিলেন স্বজনরা। তবে সেই সংসার টেকেনি। পরে তিনি রাজনীতিতে জড়ান। বর্তমানে তিনি কোটচাঁদপুর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক পদে আছেন। বিজয়ী হওয়ার পর সবার সঙ্গে শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাদিয়া আক্তার পিংকি। তিনি বলেন, ‘জয়ী হয়ে ভালো লাগছে। কোটচাঁদপুরের জনগণ আমার সঙ্গে আছে। তারা আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। জনগণ আমাকে তাদের আপনজন মনে করেন, কাছের লোক মনে করে আমাকে বিজয়ী করেছেন।’ রাজনীতিতে আসার পর পরিবারের সদস্যরা তাকে নানাভাবে সাহায্য করছেন বলেও জানান পিংকি। তিনি বলেন, ‘তিন বছর যাবৎ উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক ও বলুহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। এলাকার গরিব, দুখী ও অসহায় মানুষদের পাশে থেকে তাদের উন্নয়নে কাজ করছি। কেউ অসুস্থ হলে তাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। গভীর রাতে কেউ বিপদে পড়লে সাহায্যের চেষ্টা করি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি।’ নির্বাচিত হওয়ার পর কোন কোন বিষয়ে কাজ করতে চান প্রশ্ন করা হলে সাদিয়া আক্তার পিংকি বলেন, ‘আমি জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। অসহায় নারীদের পাশে থাকতে চাই। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে চাই। যুব সমাজের পাশে থেকে উন্নয়নের কাজ করতে চাই। সমাজকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে চাই। আর যারা তৃতীয় লিঙ্গের আছেন, আমি চাই তারা সম্মান পাক। প্রতিটা এলাকায় প্রতিটা ক্ষেত্রে তাদের যেন সম্মান দেওয়া হয়। এ কাজে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।’ নির্বাচনের বিষয়ে কীভাবে উদ্বুদ্ধ হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গ্রামের সব নারী-পুরুষ আমাকে ভোটে দাঁড়ানোর উৎসাহ দিয়েছেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা আমার সঙ্গে ছিলেন। তাদের অনুপ্রেরণায় আমি ভোটের মাঠে নামি।’ শপথ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান বলেও জানান পিংকি।
Share.

Comments are closed.